সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী- সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি :

আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী দেশের অনন্য বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একটি ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ‘আহলেহাদীছ আন্দোলন বাংলাদেশ’ পরিচালিত অত্র প্রতিষ্ঠানটি ১৪০১ হিজরী মোতাবেক ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। অতঃপর ২০০৪ সালে শুরু হওয়া ‘মহিলা সালাফিইয়াহ মাদ্রাসা’ ২০১০ সাল থেকে অত্র মারকাযের অধীনে পৃথক ক্যাম্পাসে পরিচালিত হয়ে আসছে, যা ২০১৭ সাল থেকে ‘আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী (মহিলা শাখা)’ নামে অভিহিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই অত্র প্রতিষ্ঠানটি যথার্থভাবে ইলমে দ্বীন ও সমকালীন জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষাদানে গুরুত্বারোপ করে আসছে। সাথে সাথে যথাযথ অনুশীলনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আমলের প্রসার ঘটানো এবং ইসলামের নামে প্রচলিত ভ্রান্ত আক্বীদা ও আমল সমূহের সংস্কার সাধনের জন্য সাধ্যমত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী’ এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে, যা প্রচলিত মাদ্রাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষার দ্বি-মুখী ধারাকে সমন্বিত করে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ সুন্নাহ ভিত্তিক একক ও পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পথ প্রদর্শন করে। ছেলে ও মেয়েদের পৃথক শিক্ষাপরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে উভয়ের জন্য উচ্চশিক্ষার দুয়ার খুলে দেওয়া এবং তাদেরকে সর্বোত্তম ইসলামী নৈতিকতা সম্পন্ন আদর্শ মুসলিম হিসাবে গড়ে তোলাই অত্র প্রতিষ্ঠানটির একান্ত লক্ষ্য। এ ব্যাপারে আমরা ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক ও সুধী মহলের আন্তরিক দো‘আ ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন।- আমীন!

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য 

১. পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে শিক্ষাদান। 

২. মুহাদ্দেছীনের মাসলাক অনুসরণে ও সালাফে ছালেহীনের বুঝ অনুযায়ী কুরআন ও সুন্নাহ্র যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান। 

৩. ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কারমুক্ত ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতির অনুশীলন এবং বিকাশ সাধন।

৪. আল্লাহভীরু যোগ্য আলেমে দ্বীন, লেখক, গবেষক, বাগ্মী ও দেশপ্রেমিক নাগরিক সৃষ্টি করা। 

৫. সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উপযুক্ত নেতৃত্ব ও দাঈ ইলাল্লাহ গড়ে তোলা। 

প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান

শিক্ষানগরী রাজশাহীর নওদাপাড়া আম চত্বর সংলগ্ন নিজস্ব ক্যাম্পাসে ও মনোরম পরিবেশে অত্র প্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের দু’পাশে প্রায় সাড়ে দশ বিঘা জমির উপর অবস্থিত প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে তিনতলা ও চারতলা বিশিষ্ট একাডেমিক ও আবাসিক ভবন এবং বৃহদায়তন ৬ তলা ইয়াতীম ভবন ও দু’দিকে দু’টি মসজিদ রয়েছে। এর অনতিদূরে ৯ বিঘা জমির উপর সুউচ্চ প্রাচীরবেষ্টিত পৃথক ‘আল-মারকাযুল ইসলামী আস-সালাফী মহিলা শাখা’ অবস্থিত। সেখানে ইতিপূর্বে ৩৫ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ৫তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে ৩৭ কক্ষ বিশিষ্ট আরো একটি ৫তলা ভবন নির্মাণ শেষের পথে। ফালিল্লা-হিল হাম্দ।

বৈশিষ্ট্য সমূহ 

১. শিক্ষার্থীদেরকে নির্ভেজাল তাওহীদ ও ছহীহ সুন্নাহ্র আলোকে চরিত্রবান ও সুন্নাতের পাবন্দ হিসাবে গড়ে তোলা।

২. ইসলামী আদব, আক্বায়েদ ও আহকামের উপর বুনিয়াদী শিক্ষা প্রদান এবং মাসনূন দো‘আ সমূহ মুখস্থ করানো। 

৩. বাংলা, আরবী, ইংরেজী ও উর্দূ ভাষায় ব্যবহারিক দক্ষতা সৃষ্টি করা। 

৪. আবাসিক শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে তদারকি। 

৫. মনোরম পরিবেশ ও উন্মুক্ত খেলার মাঠ।

৬. নিজস্ব চিকিৎসকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা।

৭. নিয়মিত সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা। 

৮. ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞান ও সাহিত্য অধ্যয়নের জন্য সমৃদ্ধ পাঠাগার। 

৯. আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য মানসম্মত আবাসন ও আহারের ব্যবস্থা।

১০. ইয়াতীম শিক্ষার্থীদের সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য স্বতন্ত্র ‘ইয়াতীম বিভাগ’।

১১. মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।

১২. স্বতন্ত্র হিফয ও মক্তব বিভাগ। 

১৩. নিজস্ব সিলেবাস দ্বারা পরিচালিত ‘ছানাবিয়াহ’, কুল্লিয়া ও ‘তাখাছ্ছুছ’ বিভাগ।

১৪. মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অত্র প্রতিষ্ঠানের ‘মু‘আদালাহ’ থাকায় মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ।

শিক্ষাস্তর 

বালক শাখার শিক্ষার স্তর ৭টি। 

১. মক্তব বিভাগ : ১ বছর।

২. হিফয বিভাগ : ৩ বছর।

৩. ইবতেদায়ী (প্রাথমিক) : ৫ বছর।

৪. মুতাওয়াস্সিতাহ (মাধ্যমিক) : ৫ বছর।

৫. আলিম/ছানাবিয়াহ (উচ্চ মাধ্যমিক) :২ বছর।

৬. কুল্লিয়া : ৩ বছর।

৭. তাখাছ্ছুছ : ১ বছর।

মহিলা শাখার শিক্ষার স্তর ৬টি। 

১. শিশু (প্রাক প্রাথমিক) : ১ বছর।

২. মক্তব বিভাগ : ১ বছর।

৩. হিফয বিভাগ : ৩ বছর।

৪. এবতেদায়ী (প্রাথমিক) : ৫ বছর।

৫. মুতাওয়াস্সিতাহ (মাধ্যমিক) :৫ বছর।

৬. দাওরায়ে হাদীছ ২ বছর।

পাঠ্যক্রম 

বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সিলেবাস, কওমী নেছাব ও মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস অনুসরণে হাদীছ ফাউণ্ডেশন শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক সুবিন্যস্ত সিলেবাস অনুযায়ী পাঠ্যক্রম তৈরী করা হয় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিলেবাস শেষ করা হয়। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মানোন্নয়নের জন্য দু’টি শ্রেণী মূল্যায়ন/পাঠমূল্যায়ন (ঈষধংং ঞবংঃ) সহ বছরে ২টি পরীক্ষা নেওয়া হয়।